তাহাজ্জুদের সহজ একটি উপায় হলো সাহরির জন্য কিছুক্ষণ আগে উঠে যাওয়া। খুব সময় নিয়ে ভারী আয়োজন করে সাহরি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে। সেটাকে একটু সেক্রিফাইস করি। যদি ফজরের আজানের এক ঘন্টা আগেও উঠি। এরপর সাহরি ও আনুসঙ্গিক প্রয়োজনগুলো ২০ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে শেষ করি। তাহলেও তাহাজ্জুদের জন্য অনেক সময় পাওয়া যায়। একান্তই না পারলে, আজানের আগে অন্তত ৫-১০ মিনিট সময় রাখি তাহাজ্জুদের জন্য।
অর্ধ রাতের পর থেকে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া ভালো। আর শেষ রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা সর্বোত্তম। তাহাজ্জুদ নামাজ ২ থেকে ১২ রাকাআত পর্যন্ত পড়ার বর্ণনা পাওয়া যায়। তবে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ৮ রাকাত তাহাজ্জুদ পড়তেন। তাই ৮ রাকাআত তাহাজ্জুদ পড়াই উত্তম। তবে এটা যেহেতু ফরজ কোন নামাজ নয়। তাই কোনরকম বাধ্যবাধকতাও নাই। এটা সম্পুর্ন স্বেচ্ছাধীন।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন,
“এবং রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তে থাকুন। এ নামাজ আপনার জন্যে আল্লাহর অতিরিক্ত ফজল ও করম। শীঘ্রই আল্লাহ আপনাকে উভয় জগতে কাঙ্খিত মর্যাদায় ভূষিত করবেন।“ (সূরা বনী ইসরাঈল-৭৯)
“নিশ্চয়ই মুত্তাকি লোক বাগ-বাগিচায় এবং ঝর্ণার আনন্দ উপভোগ করতে থাকবে। এবং যে যে নিয়ামত তাদের প্রভূ তাদেরকে দিতে থাকবেন, সেগুলো তারা গ্রহণ করবে। কারণ, নিঃসন্দেহে তারা এর পূর্বে (দুনিয়ার জীবনে) মুহসেনীন (বড় নেককার) ছিল। তারা রাতের খুব অল্প অংশেই ঘুমাতো এবং শেষ রাতে ইস্তেগফার করতো। (কেঁদে কেঁদে আল্লাহর কাছে মাগফেরাত চাইতো)”। (সূরা যারিয়াত:১৫-১৮)
“রহমান-এর বান্দা তারাই, যারা তাদের প্রতিপালকের দরবারে সিজদা করে এবং দাঁড়িয়ে থেকেই রাত কাটিয়ে দেয়।“ (সূরা ফুরকান: ৬৩-৬৪)
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, ‘ফরজ নামাজের পর সব নফল নামাজের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো কিয়ামুল লাইল (রাতের নামাজ) বা তাহাজ্জুদ নামাজ।’ রাসুলুল্লাহ (সাঃ), সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ), তাবেয়ীগন, তাবে-তাবেয়ীগনসহ সর্ব যুগের আল্লাহর প্রিয় মুত্তাকী বান্দাগন তাহাজ্জুদ নামাজে রাত কাটিয়ে দিয়েছেন।
রমজানের রাতগুলোতে আমরাও তাই একটু চেষ্টা করতে পারি। গভীর রাতে আল্লাহর দরবারে একান্তে লুকিয়ে কিছুটা চোখের পানি গড়াতে। কেঁদে কেঁদে আল্লাহর কাছে মাগফেরাত চাইতে।