Freelancing Guide - Novice To Ninja




পৃথিবীতে বিভিন্ন জাতি-পেশার মানুষ আছে পেশা মানুষের ইচ্ছা, রুচি অথবা বংশ পরম্পরায়ের মাধ্যমে গড়ে ওঠে তেমনি বর্তমান পৃথিবীতে ফ্রীল্যন্সিংও একটা পেশা শেখার আগ্রহ ও যথাযথ উপকরন থাকলে যে কেউ এ পেশাই আসতে পারে

ফ্রীল্যন্সিং কিঃ ফ্রীল্যন্সিং মানে হল মুক্তজীবি এটা একটা আইটি সেক্টর ভিত্তিক পেশা সহজ কথাই বলতে  গেলে কারোর অধীনে বা নিয়ন্ত্রনে না থেকে বুদ্ধিমত্তা খাটিয়ে নিজের তৈরী আইটি প্রডাক্টস বা সার্ভিস বিক্রি করা অথবা নিজের স্বাধীনতা থেকে বাহির না হয়ে অন্যের চাহিদা মোতাবেক প্রডাক্টস তৈরী করে দেয়া ফ্রীল্যন্সিং এর আরেক নাম আউসোর্সিং ফ্রীল্যন্স হলো মুক্তজীবি পেশা এ পেশার জন্য কাউকে অফিসে যেতে হয়না উপকরন ও কাজ জানা থাকলে পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে ঘরে বসে কাজ করা যায়

উপকরনঃ যেকোন কাজের জন্য উপকরন একটা বড় জিনিস উপকরন ছাড়া কোন কাজ করা যায়না যেমন- লেখার জন্য কলম লাগে, মাল বহনের জন্য গাড়ি লাগে, মাটি কাটার জন্য কোদাল লাগে ইত্যাদি উপকরন কাজের ধরনের উপর নির্ভর করে তৈরি করা হয় যেহেতু ফ্রীল্যন্সিং একটা আইটি সেক্টর ভিত্তিক পেশা, সেহেতু এ কাজের জন্য উপকরন হিসাবে একটা কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সংযোগ অবশ্যই লাগবে আর বর্তমান দুনিয়াকে তো ইন্টারনেট ছাড়া কল্পনাই করা যায়না এছাড়া প্রিন্টার, ওয়েবক্যাম, স্ক্যানার, পেনড্রাইভ ও CD ক্যাসেট ইত্যাদির প্রয়োজন পড়ে
মনস্তত্ত্বঃ মনস্তত্ত্ব বা মানসিক প্রস্তুতি অনেক বড় জিনিস যেকোন বড় বা মহৎ কাজের জন্য অবশ্যই সুদৃঢ় মানসিক প্রস্তুতি প্রয়োজন মানসিক প্রস্তুতি ছাড়া কোন কাজ করা প্রায়ই অসম্ভব তাই ফ্রীল্যন্সিং পেশায় আসতে হলে অবশ্যই দৃঢ় মনোবল নিয়ে আসতে হবে এর ভিতরে ধৈর্য, একাগ্রতা, শেখার আগ্রহ, প্রতিকুল পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নেয়া, সম্পর্ক ভাঙনের মোকাবেলা ইত্যাদি অন্যতম পেশায় সফল হতে হলে সর্বদা পজিটিভ ধ্যান-ধারনা পোষণ করতে হবে

শিখন প্রণালীঃ ফ্রীল্যন্সিং কাজটা অনেকটা ক্রিয়েটিভ বা সৃজনশীল নির্ভর বিশ্বের অন্যতম প্রোগ্রামার Windows এর আবিষ্কারক বিল গেট্স বলেছিলেন-“তুমি যদি তোমার মনের ভিতর ভাল কোন ডিজাইন আইডিয়া বা কল্পনা না আনতে পার অথবা মনের কল্পনাকে যদি রঙের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে না পার, তাহলে জেনে রেখ প্রোগ্রামিং তোমার জন্য নাকথাটা একটু রুঢ় শোনালেও শতভাগ সত্যি তারপরেও চেষ্টা করলে অনেকে অনেক কিছু করতে পারে
ফ্রীল্যন্সিং করতে হলে অবশ্যই কাজ শিখতে হবে এবং সেটা অবশ্যই আইটি সেক্টর ভিত্তিক বা কম্পিউটারের উপর হতে হবে যেমন- ওয়েব ডিজাইন, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, SEO বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, মোবাইল এপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট, ব্লগিং বা আর্টিকেল রাইটিং ইত্যাদি এছাড়া কম্পিউটার ও ইন্টারনেট নির্ভর অনেক কাজ শেখা যেতে পারে

কাজ শেখার মধ্যম প্রাথমিক নতুনরা হতাশ হয়ে অনেক সময় পিটিসি সাইটগুলোতে তাদের মূল্যবান সময়, শ্রম ও অর্থ ব্যয় করে কিন্তু বিনিময়ে প্রতারনা ছাড়া আর কিছুই পাইনা এথেকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে একটা কথা মনে রাখতে হবে- সহজ পথে ক্যারিয়ার গড়ার চিন্তা করা মানে নিজের জীবনকে সংকুচিত করে ফেলা অতএব, ফ্রীল্যন্সিং করতে হলে উপরোক্ত কাজের যেকোন একটা কাজ যত কষ্ট হোক ভালভাবে শিখতে হবে
কাজ কিভাবে শিখবেনঃ ফ্রীল্যন্সিংয়ের কাজ শিখতে বা করতে হলে আপনাকে অবশ্যই কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের উপর ন্যুনতম জ্ঞান থাকতে হবে এই ইন্টারনেট জগতে আপনি গুগলের(Google) নাম শুনে থাকবেন আপনাকে সর্ব বিষয়ে সাহায্য করাই এর কাজ আপনার সমস্ত প্রশ্নের উত্তর এ দিবে আপনি শুধু আপনার প্রয়োজনের কথা এর ভিতরে লিখে দিন, আপনার প্রয়োজন পূরণ করা Google এর দায়িত্ত্ব আপনি যদি ওয়েব ডেভেলপিং শিখতে চান তাহলে w3schools.com উত্তম জায়গা বাংলা সাইটগুলোর ভিতরে rrfoundation.net, techtunes.com.bd, bdgeeks.com ইত্যাদি অন্যতম এছাড়া বাংলা ও ইংরেজীতে ইন্টারনেটে অনেক ফ্রী ভিডিও টিউটোরিয়াল ও ব্লগ পাওয়া যায় ভিডিও টিউটোরিয়ালের জন্য পৃথিবীর বিখ্যাত ভিডিও শেয়ারিং সাইট youtube.com দেখতে পারেন এছাড়া বিষয় ভিত্তিক কাজ শেখার জন্য প্রচুর সাইট রয়েছে

কাজ শুরুঃ যখন আপনি কাজ শিখেছেন এবং আপনার কাছে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আছে তখন আপনি ফ্রীল্যন্সিংয়ের কাজ করার জন্য উপযুক্ত বিদ্যা আহরণের জন্য আমরা যেমন বিদ্যালয়ে যাই, সওদা কিনতে আমরা যেমন বাজারে যাই তেমনি ফ্রীল্যন্সিংয়ের কাজ পেতে হলে আপনাকে ফ্রীল্যন্স মার্কেটপ্লেস গুলোতে যেতে হবে কাজ শেখা অবস্থায় আপনি হয়তো odesk.com, freelancer.com, elance.com, 99designs.com, peopleperhour.com, guru.com ইত্যাদির নাম শুনে থাকবেন এসবই আপনার কাজের ক্ষেত্র চাকরির জন্য আমরা যেমন অফিসে আমাদের বায়োডাটা জমা দেই, তেমনি ফ্রীল্যন্স মার্কেটপ্লেস গুলোতে কাজ পাওয়ার জন্য একটা সুন্দর প্রোফাইল থাকতে হবে মার্কেটপ্লেস গুলোতে দেখবেন ক্লায়েন্ট বা মক্কেলরা তাদের প্রয়োজন ও প্রয়োজনের প্রেক্ষিতে পরিশোধের কথা বর্ণনা করে পোষ্ট দিয়েছে যদি আত্নবিশ্বাসী হন তাদের প্রয়োজন পুরণ করতে পারবেন তাহলে সে কাজে আবেদন করতে পারেন ক্লায়েন্ট আপনাকে পছন্দ করলে আপনাকে কাজ দিবে এবং কাজ শেষ হলে বিনিময়ে চুক্তি অনুযায়ী সম্মানী দিবে

নতুনরা যেভাবে ফ্রীল্যন্সিং শুরু করতে পারেঃ ফ্রীল্যন্সিং পেশায় আসতে চাচ্ছেন অথচ এ বিষয়ে একেবারে নতুন তাকে অবশ্যই কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের উপর বেসিক ধারণা থাকতে হবে এরপর কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ভিত্তিক একটা কাজ শিখতে হবে এরপর ফ্রীল্যন্সিং মার্কেটপ্লেস গুলোতে প্রোফাইল বানাতে হবে এবং ক্লায়েন্টের চাহিদা মোতাবেক প্রোডাক্টস বা সার্ভিস সরবরাহ করতে হবে যা এতক্ষণ উপরে আলোচনা করা হয়েছে
কিন্তু একটা বিষয় লক্ষ্যণীয়, কাজ শেখার প্রাথমিক অবস্থায় অনেক ঝড়-ঝঞ্জা, বাধা-বিঘ্ন আসে তাতে হতাশ হলে চলবেনা বাধাকে শক্তি মনে করে এগিয়ে যেতে হবে মনে রাখতে হবে-“Failure is the pillar of success-ব্যর্থতাই সফলতার চাবিকাঠিদেশে অনেক সফল ফ্রীল্যন্সার আছেন যারা ২০/২৫ বার হতাশ হয়ে কাজ ছেড়ে দিয়েছেন তারপর আবার শুরু করেছেন শুরুতে বাধা-বিঘ্ন আসবে এটা স্বাভাবিক, কিন্তু ছেড়ে দিলে চলবেনা যে করেই হোক কাজে লেগে থাকতে হবে সফলতা আসবেই

শিখতে যদি সমস্যা হয় বা কোথাও আটকে যান তাহলে ফেসবুক, গুগল বা অভিজ্ঞদের কাছে প্রশ্ন করুন, উত্তর পেয়ে যাবেন সময়, ধৈর্য, আগ্রহ ও একাগ্রতা নিয়ে করলে পৃথিবীর যেকোন কাজই সম্পন্ন করা সম্ভব শুভদিন আসবেই

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম