আমাদের এক মেয়ের বিয়ের জন্য একবার ছেলে দেখতে গেলাম। শুনেছিলাম ছেলে নাকি অনেক পয়সাওয়ালা এবং ৮ বার হজ্জ্ব করেছে। আমার সাথে কিছু মুরুব্বী ছিল। মুরুব্বীদের সামনে যথারীতি ছেলের ইন্টারভিউ শুরু হল। যদিও বিষয়টা আমার কাছে বিদঘুটে লাগে তারপরেও মুরুব্বীদের অনুরোধে ইন্টারভিউ আমি নিচ্ছিলাম।
ছেলের একাডেমিক লেখা-পড়ার অবস্থা খুবই নাজুক। তাই আমি আর প্রশ্ন করে তাকে বিব্রত করতে চাচ্ছিলাম না। কিন্ত মুরুব্বীরা অনুরোধ করলো তাকে ধর্মীয় সাইডে কিছু প্রশ্ন করতে। আমি ছেলেকে জিজ্ঞেস করলাম- আল্লাহ কোথায় থাকে? - নো এন্সার। চার মাজহাবের নাম কি কি? - নো এন্সার। কুরান শরীফে কতবার নামাজের তাগিদ দেওয়া হয়েছে? - নো এন্সার। ইক্বলাব-ইদ্গাম-ইজহার এগুলার মধ্যে পার্থক্য কি? - নো এন্সার।
৮ বার হজ্জ করা ধার্মিক ছেলের এই অবস্থা দেখে আমি কিছুটা অবাক হলাম। ছেলের চুপ করে থাকা দেখে মুরুব্বীরা বলল প্রশ্ন মনে হয় একটু কঠিন হয়ে গেছে, সহজ কিছু জিজ্ঞেস কর। তারপর আবার জিজ্ঞেস করলাম- কুরান শরীফের সর্বশেষ সূরা কোনটি? - আবারো নো এন্সার। কুরান শরীফের যেকোন সূরার প্রথম তিন আয়াত বলতে পারবেন? - নো এন্সার।
আমি আর কোন প্রশ্ন করতে চাচ্ছি না এটা মুরুব্বীদের বুঝিয়ে বললাম। পরে ছেলেকে একপাশে ডেকে নিয়ে বললাম কাহিনী কি ভাই? আপনি এতবার এত টাকা খরচ করে হজ্জ্ব করছেন, নিশ্চয় ধর্ম সম্পর্কে অনেক জানেন। কিন্ত আপনি মুরুব্বীদের সামনে কিছুই বলতে পারলেন না কেন? ছেলেটা বলল ভাই, আমি আসলে আমি এত টাকা খরচ করে হজ্জ্ব করিনি। সৌদি আরবের মক্কায় ছিলাম ৯ বছর। ওখান থেকে প্রতি বছর হজ্জ্ব করতে যেতাম, শুধু গাড়ী ভাড়াটা লাগত ২০০ রিয়ালের মত।