মেয়েকে, ইসলামের শিক্ষা

মসজিদ থেকে জুম্মার নামাজ পড়ে বাসায় ঢোকার সাথে সাথে Bithi বলল, ‘প্রতি শুক্রবার না তোমার বড় মেয়ে Nameera কে নিয়ে বসার কথা? দুনিয়ার মানুষকে ‘বানান শিক্ষা, যাদু শিক্ষার’ তালীম দাও... যাও এখন দয়া করে নিজের মেয়েকে কিছু সময় দাও।’ বলেই, আমাকে আর আমার বড় মেয়েকে ড্রয়িং রুমে ঢুকিয়ে দরজা আটকিয়ে দিলো।

পাঞ্জাবি পড়া অবস্থায় তো আর মেয়ে কে ‘সাইন্স’ বা ‘ইতিহাসের’ শিক্ষা দাওয়া যায় নাহ, তাই ভাবলাম, ‘ওকে আজ ইসলামের শিক্ষা দেই কিছু’

আমি সোফায় বসে আছি, মেয়ে আমার সামনে দাড়িয়ে আছে মনযোগী ভঙ্গিতে। বুঝা গেল আমি মসজিদে থাকা অবস্থায় তাকেও ঝাড়া হয়েছে। আমি সোফায় বসে আছি আর সে আমার সামনে দাড়িয়ে আছে... আমি তার দুই হাত ধরে তার চোখের দিকে তাকিয়ে দীক্ষা দাওয়া শুরু করলাম... সে মনোযোগ দিয়ে শুনছে!

আমি শুরু করলাম... ‘বাবা শুনো, আল্লাহ্ আমাদের দুই কাধে দুইজন ফেরেশতা দেখে দিয়েছেন... যারা খাতা-কলম নিয়ে বসে আছে। এই যে, আমাদের ডান কাধে একজন ভালো ফেরেশতা বসে আছে যার নাম হল ‘কিরামান ’ আর এই বাম কাধে একজন ফেরেশতা বসে আছে যার নাম হল ‘কাতিবীন’।

আমার মেয়ে বলল, ‘ওকে’

আমি বলতে থাকলাম, এখন সারাদিনে তুমি যতজনকে হাসাতে পারবে, ডান কাঁধের ফেরেশতা ওটার হিসেব রাখবে, কারন মানুষকে হাসানো ভালো কাজ... এতে আল্লাহ্ খুশি হন। আর সারাদিনে যতজন কে কাদাবে ওটার হিসেব রাখবে বাম কাঁধের ফেরেশতা, কারন এটা খারাপ কাজ... এতে আল্লাহ্ রাগ করেন।

মেয়ের মনোযোগ বেড়ে গেলো। সে সোফায় আমার পাশে এসে বসলো।

আমি ওকে বিষয়টা এক্সপ্লেইন করতে যাব এমন সময় ধড়ামম করে দরজা খুলে বউ রুমে ঢুকলো। “এই সব নন-ইসলামিক কথাবার্তা তুমি কি শেখাচ্ছও ওকে?” ছাড়ো আমার মেয়েকে... ছাড়ো!!

তুমি আমার কথা তো শুনবা! লেট মি এক্সপ্লেইন*

চার মাসের ছোট কন্যাকে থপ করে আমার কোলে বসায়ে, তাহাদের মাতা আর বড় কন্যা দুইজনই ঘটঘট করে আমাকে রুমে একা রেখে বের হয়ে গেলো। আমি ছোট কন্যার দিকে তাকিয়ে দেখি সে মাড়ি বের করে হাসছে। যদিও আমি খুশি হলাম তারপরেও আমি জানি, ‘কন্যাদ্বয়ের মাতা যে আজ আমাকে কাঁদালো, এর জন্য তার বাম কাঁধের ‘কাতিবীন’ আলরেডি কলমের খোঁচা চালিয়ে দিয়েছেন’!

কিন্তু, ছোট মেয়ের হাসির নেকীর দাগটা, কার ডান কাঁধের ফেরেশতা দিলো... এটা এখনও ক্লিয়ার নাহ!

[NB: আরিফ ভাইয়ের ওয়েবসাইট (arifrhossain.com) ডাউন। আমি জানিনা উনার এই সাইটটা কে ম্যানেজ করে। এটা ডাউন রাখা উচিত হয়নি। উনার লেখাগুলা আমার কাছে অনেক ভাল লাগে। তাই ওয়েব আর্কাইভ থেকে লেখাগুলো কপি করে এখানে রেখে দিচ্ছি, যাতে করে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম লেখাগুলো পড়তে পারে। Wednesday, 07 November 2012]


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম