হিপ্ন-টাইজ

জীবনে প্রথম কাউকে হিপ্ন-টাইজ করে ঘুম পাড়িয়ে দিলাম। আমার বড় মেয়ে Nameera কে রাতে ঘুম পাড়ানর দায়িত্ব আমার। প্রতিদিন ১ ঘণ্টার মত লাগে আমার মেয়েকে ঘুম পাড়াতে। ইদানিং আবার সে নতুন কথা শিখেছে তাই ঘুমোতে যাবার আগে শুরু হয় তার না ঘুমানোর নতুন নতুন ফন্দি। গতকাল রাতে ওকে নিয়ে শুয়েছি, সে বলল, ‘বাবা,এখনও আমার পা এর ঘুম আসেনি...’ (বলে সে সমানে পা নাড়াতে থাকলো)। আমি পড়লাম মসিবতে... এখন, পা এর ঘুম কি জিনিষ?

আমি বললাম, ‘ও আচ্ছা’।

একটু পড়ে সে বলল, ‘বাবা এখনও কিন্তু আমার জিব্বার ঘুম আসেনি...’ (বলে সে সমানে মুখ হা করে জিব্বা নাড়াতে থাকলো)। আমি মনে মনে বললাম ‘আচ্ছা মুসিবত’!!

নিজের মেয়ে না হলে হয়তো এতক্ষনে থাবড়া থুবড়া দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিতাম। যাই হোক আমি মাথা ঠাণ্ডা রেখে বললাম, ‘বাবা, আমি এখন আস্তে আস্তে করে তোমার হাত পা চোখ নাক মুখ কান সব গুলোকে ঘুম পাড়িয়ে দিব ...ওকে? কিন্তু তুমি নড়াচড়া করবা নাহ’। মেয়ে বলল, “ওকে”

আমি আস্তে আস্তে ওর পায়ে আদর করতে করতে বললাম, ‘পা এখনই ঘুমিয়ে যাবে আর নড়বে নাহ... এখনই ঘুমিয়ে যাবে ...ওয়ান টু থ্রি... পা ঘুমিয়ে গেছে’ (সে পা নাড়ানো বন্ধ করলো)। আমি বলতে থাকলাম, ‘হাত এখনই ঘুমিয়ে যাবে আর নড়বে নাহ... এখনই ঘুমিয়ে যাবে ...ওয়ান টু থ্রি... হাত ঘুমিয়ে গেছে’ (সে হাতও নাড়ানো বন্ধ করলো)। এভাবে কান, নাক, চুল কে ঘুম পাড়ালাম। তারপর বললাম, ‘এখন, তোমার চোখ ঘুমিয়ে যাবে... ওয়ান টু থ্রি’। বলা শেষ করে দেখি সে আসলেই ঘুমিয়ে গেছে। আমি ভয় পেয়ে গেলাম। এতই ভয় পেলাম যে ওকে ঘুম থেকে ডেকে তুললাম। সে চোখ লাল করে আমার দিকে তাকাল।

জীবনের প্রথম কাউকে হিপ্ন-টাইজড করে ঘুম পাড়িয়ে আসলেই নিজে নিজে অভিভূত। আজকে রাতে এই স্কিল কাজে দিবে না জানি কারন আজকে আমার মেয়ে নতুন ফন্দি বের করবে। আফসোস...

(তবে হ্যাঁ এই স্কিল আমি বৃথা যেতে দিব নাহ। Bithi যখন ঝগড়া করবে, “ ঐ ...তোমাকে কি ডাইপার আনতে বলছি আর কি আনলা? এখনও জানও না যে তোমার বড় মেয়ে ব্যবহার করে পেম্পারস আর ছোট মেয়ে ব্যবহার করে হাগিস... তুমি কথা থেকে ‘চুচু ডাইপার’ নিয়ে আসছ? উত্তর দাও... ঐ... উত্তর দাও... মন কোথায় থাকে? সারাদিন ফেসবুকে মন পরে থাকে? কেনও এই সিম্পল জিনিষটা মাথায় থাকে নাহ?? ঐ উত্তর দাও... মোবাইল টিপছ কেন? এদিকে তাকাও...ঐ ***********”।

তখন আমি বলব, “বীথি আমারররর চোখের দিকে তাকাওওও ...তুমি এখন দাড়িয়ে দাড়িয়ে ঘুমিয়ে যাবে... তুমি অনেক টায়ার্ড... হ্যাঁ তুমি টায়ার্ড...আমি কোনও উত্তর দিব না কারন তুমি আর কোনও প্রশ্ন করবে নাহ... এই তো হচ্ছে ...বড় করে নিঃশ্বাস নাও...ওয়ান টু থ্রি

ইনশাল্লাহ)

[NB: মূল লেখক Arif R Hossain ভাই। উনার ওয়েবসাইট  http://arifrhossain.com ডাউন। তাই আমি ওয়েব আর্কাইভ থেকে কপি করে এখানে পোষ্ট করেছি, যাতে করে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মও লেখাগুলা পড়তে পারে। Wednesday, 07 November 2012]


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম