মিসেস A হলেন মিস্টার B এর স্ত্রী। গোপনে, B এর আবার আরেকটা বউ আছে নাম হল C, যার কথা কেউ জানে না; A ও C কে চিনে না… আবার C ও A কে চিনে নাহ। একদিন হল কি, A মাথা ঘুরিয়ে পরে গেল... B এসে দৌড়ে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেল। ওখানে যেয়ে দেখে D উপস্থিত; D হল C এর ছোট ভাই। বেচারা B অনেক কষ্টে D কে আড়ালে রেখে হাসপাতালের কাজ সম্পন্ন করলেন। ডাক্তার E বললেন, ‘বেশী পানি খাবার কারনে A এর কিডনি ড্যামেজ হয়ে গেছে... বদলাতে হবে’
যেই কথা সেই কাজ... F পেপারে বিজ্ঞাপন দেয়ার পরামর্শ দিলেন। ও আচ্ছা, F হলেন ডাক্তার E সাহেবের ছোট ভাই যে কিনা আবার B এর অফিসের কলিগ।
ওদিকে, C এর ছোট বোনের নাম G... তার সংসারে জামাই নেই... জামাই H মারা গেছে দুই বছর আগে রোড এক্সিডেন্টে ছোট ছোট দুটো ফুটফুটে বাচ্চা I আর J কে রেখে।এক সকালে, কিডনি চাই বিজ্ঞাপনটা G এর চোখে পড়ল। সংসারের বৃহত্তর স্বার্থে উনি চিন্তা করলেন যে তিনি কিডনিটা বিক্রি করে দিবেন I আর J এর উজ্জ্বল ভবিষ্যতের তাগিদে
কিডনি প্রতিস্থাপনের দিন B তো হাসপাতালে এসে তো অবাক। এখন যদি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয় তাহলে G, দেখে ফেলবেন A কে আর বুঝে যাবেন এটা তার স্ত্রী... বিরাট চিন্তার বিষয় । এ দিকে হল কি, M যিনি গত সপ্তাহে গাড়িসহ নদীতে পরে গিয়েছিল, তাকে উঠিয়ে এই হাসপাতালেই, পাশের বেডে ভর্তি করা হয়েছে
ও আচ্ছা M হল এই J এর প্রাইভেট টিউটর; যে কিনা আবার F এর সম্বন্ধী
(এলফাবেট এর সংকট থাকায় গল্পটা আর কন্টিনিউ করতে পারছি না... এটা হল এক হিন্দি সিরিয়ালের গল্প। মাঝে মাঝে ফ্যামিলির চাপে পরে একটু আকটু দেখি আর কি!
ঈদের সময় ৮/৯ দিন দেশে ছিলাম না তাই আমার ফ্যামিলি বেশ কয়েকটা এপিসোড মিস করেছে। আমার বউ ঢাকায় এসে টিভি ছেড়ে হিসাব মিলাতে পারছে নাহ M কিভাবে পানিতে পড়ল!
ইউটিউব সার্চ করে পরে বুঝতে পারা গেল যে M আসলে ইচ্ছে করে পানিতে পরেনি... F এর কাছ থেকে টাকা খেয়ে ড্রাইভার সাহেব N ইচ্ছে করে গাড়ির ব্রেক ফেইল করিয়ে দিয়েছে যেন M উপুত হয়ে নদীতে পরে যায়।
কাহিনী এখানেই শেষ না... পরেছে M হয়ে, কিন্তু উঠেছে L হয়ে।
আমি বউ কে জিজ্ঞেস করলাম, ‘এইটা কি হইল’?
“আরে নদীতে মাগুর মাছ ছিল... ওটা M এর মুখে কামড় দিয়েছে তাই চেহারা বিনষ্ট হয়ে গেছে। প্লাস্টিক সার্জারি করে নতুন চেহারা লাগিয়েছে... তাই M এখন L”
আমি বললাম, ‘ফাইযলামি করো? মাগুর মাছের খায়ে দায়ে কাম নাই M এর মুখে কামড় দিবে’
“আরে বাবা ইন্ডিয়ানরা কুমির কে মাগুর মাছ বলে”
‘ও...তো শুধু মুখ কেনও? ফুল বডি খায়ে ফেলাইতো... মামলা খতমম’
“যা বুঝো না তা নিয়ে কথা বলবে নাহ!!’
---
সত্যি বলতে, তারা এত কষ্ট করে এই সব আন-লজিক্যাল হিন্দি সিরিয়ালগুলো দেখেছে, এদের এখন কি বলা উচিত? বলা কি উচিত যে, “এখন থেকে এসব একদম বাদ... টিভি দেখতে হলে দেশীও চ্যানেলে দেখবে??
এই বৃহস্পতিবার দেখলাম, বাংলাদেশের এক চ্যানেলের এক নাটকের কাহিনী হল এক গ্রামের চেয়ারম্যানের পিছে ফোড়া হয়েছে... তিনি লুঙ্গি উচিয়ে হাঁটছেন আর গ্রামের মানুষ তার নাম দিয়েছে ফোড়া চেয়ারম্যান। এটাই কাহিনী... ফোঁড়া দিয়ে শুরু... ফোঁড়া দিয়েই শেষ।
"কি দেখতে বলব তাদের? মন্দগুলো? নাকি ‘মন্দের ভাল’ গুলো?
যে জিনিষগুলো আগ্রহ সৃষ্টি করে না সেগুলো দেখতে আমি আমার ফ্যামিলিকে কিভাবেই বা জোর করি?"
btw…গত সপ্তাহে কি হয়েছে শুনেন… M এর, ধুত্তরি… আই মিন L এর কন্যা আর J আবার একই স্কুলে… একই ক্লাসে পড়ে। রোল নম্বর ও পাশাপাশি, ১১ আর ১৩। বিশালল টান টান উত্তেজনার ব্যাপার-স্যাপার।
ওদিকে রোল নম্বর ১২ কে জানেন? বিশ্বাসই করতে পারবেন না :p
[NB: আরিফ ভাইয়ের ওয়েবসাইট (arifrhossain.com) ডাউন। আমি জানিনা উনার এই সাইটটা কে ম্যানেজ করে। এটা ডাউন রাখা উচিত হয়নি। উনার লেখাগুলা আমার কাছে অনেক ভাল লাগে। তাই ওয়েব আর্কাইভ থেকে লেখাগুলো কপি করে এখানে রেখে দিচ্ছি, যাতে করে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম লেখাগুলো পড়তে পারে। Sunday, 11 November 2012]
